ঢাকা , বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫ , ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাঁতের ব্যথা: ব্যথানাশক সমাধান নয়


আপডেট সময় : ২০২৫-০১-২২ ১৮:১৮:১৮
দাঁতের ব্যথা: ব্যথানাশক সমাধান নয় দাঁতের ব্যথা: ব্যথানাশক সমাধান নয়



মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং প্রতিনিধি।। 

অনেকেই মনে করেন, দাঁতে ব্যথা হলে ব্যথানাশক ওষুধ খেলেই সমস্যার সমাধান হবে। এটি আসলে ভুল ধারণা। ব্যথানাশক সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, তবে সমস্যার মূল কারণ দূর করতে পারে না। দাঁতের সমস্যা অবহেলা করলে তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

দাঁতব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ক্যারিজ বা দন্তক্ষয়। এটি দাঁতের সবচেয়ে সাধারণ রোগ। দাঁতে ক্যারিজ হওয়ার চারটি মূল কারণ হলো:
১. নিয়মিত ফ্লসিং না করা, ফলে দাঁতের ফাঁকে খাবার জমা হওয়া।
২. ক্যারিজ সৃষ্টিকারী জীবাণুর জন্ম।
৩. প্রক্রিয়াজাত চিনি বা শর্করাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া।
৪. দীর্ঘ সময় ধরে এই অভ্যাসগুলো বজায় রাখা।

ক্যারিজের প্রকৃতি ও সমস্যা
আমাদের দাঁতে অনেক খাঁজ থাকে (পিটস ও ফিসার), যেগুলোতে সহজেই ক্যারিজ তৈরি হয়। ক্যারিজ সাধারণত দুই দাঁতের মাঝখানে বেশি হয়, তবে দাঁতের যেকোনো স্থানে হতে পারে। ক্যারিজের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে ক্ষয় বাড়লে দাঁতে শিরশিরে ভাব, খাবার জমা হওয়া, এবং মাঝেমধ্যে হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে।

যদি সময়মতো ক্যারিজের চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এটি মজ্জার কাছাকাছি পৌঁছায় এবং মাঝেমধ্যে ব্যথা হতে শুরু করে। এই ব্যথা কান, মাথা বা চোখেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সমাধানের ধাপ
ক্যারিজ মজ্জা পর্যায়ে যাওয়ার আগেই ফিলিং করিয়ে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। এতে খরচ কম, সময়ও কম লাগে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরা এ পর্যায়ে চিকিৎসকের কাছে যান না। তারা ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করেন।

যখন ক্যারিজ মজ্জা পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তখন ব্যথা তীব্র হয়, বিশেষত রাতের বেলা। এই সময়েও অনেক রোগী অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ চালিয়ে যান। কিন্তু এতে সমস্যার মূল কারণ থেকে যায়। ফলে দাঁতের মজ্জা পচে গিয়ে জীবাণুর সংক্রমণ বাড়ে। এক পর্যায়ে দাঁতের গোড়ায় পুঁজ জমে যায়।

এই অবস্থায় রোগীরা সাধারণত চিকিৎসকের কাছে যান। রুট ক্যানেল চিকিৎসার মাধ্যমে অনেকের দাঁত বাঁচানো সম্ভব হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দাঁত তুলতে হয়।

চিকিৎসা না করলে সম্ভাব্য বিপদ
যদি এ অবস্থায়ও রোগী চিকিৎসা না নেন, তাহলে দুই ধরনের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে:
১. ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সেলুলাইটিস বা লাডউইগস অ্যানজাইনা: পুঁজ জমে গলা ফুলে গিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
২. সিস্ট, টিউমার বা ক্যান্সার: দাঁতের অনিয়মিত সমস্যাগুলো দীর্ঘস্থায়ী ও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

পরামর্শ
দাঁতের ছোটখাটো সমস্যা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অন্তত ছয় মাস পরপর দাঁতের পরীক্ষা করানো উচিত। এতে সমস্যাগুলো প্রাথমিক পর্যায়েই ধরা পড়ে এবং সহজেই সমাধান করা যায়।


 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ